Sunday, September 27, 2020

আমরা জানি, $e^{iπ}=-1$। কিন্তু কেন? যারা গণিতকে শুধু বইয়ের অক্ষরের মধ্যেই সীমিত মনে করেন, তাদের মতে এই সূত্রের কোন বাস্তব তাৎপর্য নেই। এটা নিছক সূত্রের মারপ্যাঁচে ঘটে গেছে।

ঠিক যেমনটা বলেছিলেন, আঠারশ শতকের গণিতবিদ বেঞ্জামিন পিয়ার্স
 
সূত্রটা স্বাভাবিক বুদ্ধির সম্পূর্ণ বিপরীত। একে আমরা না বুঝতে পারি, আর না জানি এটা কী বোঝায়। তবে যেহেতু এর প্রমাণ আছে, তা বাধ্য হয়ে একে মানতে হচ্ছে। 
 
কিন্তু গণিতের সব সূত্রেরই বাস্তব ও মজার তাৎপর্য থাকে। আছে অদ্ভুতদর্শন এই সূত্রেরও। সূত্রটি গণিতের অনেকগুলো শাখাকে একত্রিত করেছে। e এর আবির্ভাব ক্যালকুলাস থেকে, π আসে জ্যামিতি থেকে, i এর পদচারণা জটিল সংখ্যার জগতে। আর ০ ও ১ এর ব্যবহার পাটিগণিতে। 
 

লিওনার্দ অয়লার ছিলেন সুইস গণিত ও পদার্থবিদ। অবদান রেখেন জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল, যুক্তিবিদ্যা ও প্রকৌশলেও। গ্রাফ থিওরি ও টপোলজির সূচনা তাঁর হাত ধরেই।

 
১-কে বলা হয় গুণজ অভেদ। যেকোনো গুণের মৌলিক অংশ ১। যেভাবে যোগ-বিয়োগের মৌলিক অংশ শূন্য। যোগ-বিয়োগ করে কিছু না থাকলে থাকে শূন্য। গুণ (ও ভাগে) কাটাকাটি করে কিছু নেই মানে ১ আছে। যেমন, ৩কে ২ দিয়ে গুণ করা মানে আসলে ১কে ৬ দিয়ে গুণ করা। গুণ মানে আসলে ১কে ফুলিয়ে দেওয়া।
 
অন্য গুণের মতোই ধরুন আমরা ১ থেকে শুরু করছি। তারপর একে $e^{iπ}$ দিয়ে গুণ দিচ্ছি। 
 
e দ্বারা বোঝায় সূচকীয় বৃদ্ধি। এক কথায় এর অর্থ হলো ১কে কোনো একটি হারে নির্দিষ্ট সময় ধরে বাড়াতে থাকা। সূচকীয় বৃদ্ধি আসলে জ্যামিতিক বৃদ্ধিরই অন্য একটি রূপ, যেখানে নির্দিষ্ট সময় পরপর বৃদ্ধির বদলে বৃদ্ধি ঘটে প্রতি মুহূর্তে। 
 
এখানে e এর পাওয়ার হিসেবে আছে i, যা কাল্পনিক সংখ্যার প্রতীক। নামে কাল্পনিক হলেও সংখ্যাটা বাস্তব সংখ্যার চেয়ে কোনো অংশে কম বাস্তব নয়। এখানে e এর উপর i দিয়ে বোঝাচ্ছে আমাদের সূচকীয় বৃদ্ধিটা রৈখিক হবে না। হবে বৃত্তাকার। একটি বৃত্তকে বেয়ে ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে ঘুরে আসার মতো। উল্টো দিকে কেন? কারণ ত্রিকোণমিতিকে বৃত্তাকার চলনকে এভাবেই সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। 
 
এখন কতটুকু চলব? সেটা বলে দিচ্ছে পাই (π)। মানে আমরা পাই রেডিয়ান বা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরব।
এখন এটা জানা কথা সংখ্যারেখায় ১ আর (-১) থাকে ১৮০ ডিগ্রি উল্টো দিকে। কত দারুণ ফর্মুলাটা! 
 

এ কারণেই আমরা ১ থেকে শুরু করে (-১) এ গিয়ে থেমেছি। 
 
আরও পড়ুন 
Category: articles

Tuesday, September 8, 2020

অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রতিদিন প্রেজেন্টেশন স্লাইড বানাতে হয়। MS পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইডকে বিদায় জানিয়েছি এক বছর আগে। এখন স্লাইড বানাই কোড লিখে লিখে। ব্যবহার করি এক গাদা ল্যাংগুয়েজ। অন্তত সাতখানা। R, Markdown, Javascript, HTML, CSS, Tex (Latex) ও bash। প্রতিটা ল্যাংগুয়েজই অসাধারণ। মিলেমিশে টিমওয়ার্ক করে আমার মনের মতো স্লাইড বানিয়ে দেয়।

 


তা কোনটা কেন ইউজ করি?
R: বহুমুখী কাজের জন্য। প্রথমত Rstudio এর মাধ্যমে স্লাইড ফাইলগুলো এর মধ্যেই তৈরি করি। তবে R এর মূল অবদান আরও বড়। আমার স্লাইডে মাঝেমধ্যেই গ্রাফ বা টেবিল ও সেগুলোর হিসাব-নিকাশ থাকে। এই কাজগুলো R অটো করে দেয়। প্লট বা গ্রাফ এঁকে সেটাকে পিসিতে সেভ করে তারপর ইনসার্ট করার কোনো ঝামেলা নেই। ডেটা আর কোড লিখে দেব। গ্রাফ বা রেজাল্ট অটো চলে আসবে। ইডিট করা অনেক flexible। কোনো ভুল হলে নতুন করে গ্রাফ বানিয়ে আবারও ইনসার্ট করা- সেই দিন এখন অতীত।
 
Markdown মূলত R এ তৈরি ফাইলকে সুন্দর করে পাবলিশ করে দেয়।
এটাকে MS Word এর বিকল্প ভাবতে পারেন। Rstudio তে .Rmd ফাইলগুলোই R এর মধ্যে Markdown implement করিয়ে দেয়।
সাথে revealjs প্লাগইন ফাইলটাকে সুন্দর স্লাইড আকারে পাবলিশ করতে হেল্প করে। revealjs আবার Javascript দিয়ে করা। js হলো Javascript এর abbreviation।
 
CSS: স্লাইডের ওভারঅল থিম নির্ভর করে সরল এই ল্যাঙ্গুয়েজটার ওপর। styles.css নামে ফাইলটা প্রোজেক্ট ফোল্ডারে রেখে দিলেই কেল্লা ফতে!
 
আর HTML ছাড়া তো css ও js ইমপ্লিমেন্ট করা যাবে না। তাই তাকেও রাখতে হলো। বিশেষ করে দুই বা বহু কলামের কন্টেন্ট জাভাস্ক্রিপ্ট দিয়ে বানাতে গেলে HTMLও লাগে। আবার ক্লিক করলে দেখা যাবে এমন js script এর জন্য দরকার html।
 
Javascript এর ব্যবহার অলরেডি বলাই হয়ে গেছে। revealjs প্লাগইন দিয়ে Rmd ফাইলকে স্লাইড আকারে পাবলিশ করতে শুরুতেই js লাগছে। R এর মধ্যে এটা আছে revealjs package হিসেবে। আরও বেশ কিছু কাজে দারুণ পাওয়ারপুল js ভাষাটা ইউজ করা হয়, যার কিছু উদাহরণ অলরেডি বলেছি।
 
Tex (উচ্চারণ টেক) এর প্রশংসা তো করে শেষ করাই যাবে না। গণিতের যত কঠিন সমীকরণই দেবেন Tex সেটা পাব্লিশ করে দেবেই। Tex এর জনপ্রিয় implementation লেটেক (Latex) ইউজ করি এ কাজের জন্য।
 
bash মূলত একটি লিনাক্স শেল বা কমান্ড লাইন। এটা ইউজ করি মূলত Git ও Github এর জন্য। কাজ করা ফাইলগুলো নিয়মিত ট্র্যাক করি এর মাধ্যমে। একে বলা হয় ভার্সন কন্ট্রোল। এর প্রয়োজন ২/১ কথায় বলা সম্ভব নয়।
 
এতগুলো ল্যাংগুয়েজ ভালোই টিমওয়ার্ক করে যাচ্ছে। কোড করে কাজ করায় মজাই আলাদা ❤
কোড দেখতে চাইলে এখানটায় ঘুরে আসুন
Category: articles